শুক্রবার সন্ধ্যায় মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থানার বাহালনগর গ্রামে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের গায়ে তরল দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন লাগানোর ঘটনায় শনিবার সকাল পর্যন্ত মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় সাগরদিঘি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন আরও আটজন ব্যক্তি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত ব্যক্তিদের নাম- কুবরা বিবি (৬২), তাহিরা বিবি (২৮), তৌফিক শেখ (৪)এবং রমজান শেখ (৪০)।
কয়েক বছর আগে কড়েয়া-জামিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রমজান শেখের সাথে বাহালনগর গ্রামের বাসিন্দা কোহিনুর বিবি বিয়ে হয়েছিল। পেশায় টোটো এবং মোটর ভ্যান গাড়ির চালক রমজানের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বছর দু’য়েক আগে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হন কোহিনুর।
সূত্রের খবর -স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে দুই সন্তানের বাবা রমজান নিজের শ্যালক তামিজুদ্দিন শেখের স্ত্রী তাহিরা বিবিকে বিয়ে করার জন্য শ্বশুরবাড়িতে এসে প্রায়শই অশান্তি করত। তাহিরার স্বামী তামিজউদ্দিন শেখ পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে বর্তমানে কেরলে রয়েছেন। স্বামী বাড়িতে না থাকার জন্য রমজান তাহিরাকে বিয়ে করার জন্য পরিবারের উপর চাপ দিচ্ছিল। রমজানের এই অন্যায় দাবির বিচার করার জন্য ওই গ্রামে বেশ কয়েকবার সালিশি সভাও বসেছিল এবং রমজানকে বাহালনগর গ্রামে ঢুকতে বারণ করা হয়েছিল।
কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোক এবং গ্রামের মোড়লদের কথা না শুনে সুযোগ পেলেই শ্বশুরবাড়িতে এসে রমজান অশান্তি করত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে -শুক্রবার রাতেও শ্বশুরবাড়িতে এসে রমজান তাহিরকে বিয়ে করা নিয়ে অশান্তি করছিল। সেই সময় হঠাৎই সে নিজের সাথে থাকা তরল দাহ্য পদার্থ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন লাগার পর একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়ে ওই পরিবারের প্রতিবেশীরা তাদেরকে বাঁচাতে এলে তাদের মধ্যেও কয়েকজন আহত হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মর্জিম শেখ (৭০),ওলিউল শেখ(১৮), কিরণ শেখ (২৭) নূর মহম্মদ (৮), ফোলো বিবি (৪৫) রাজু ফুলমালি (২৪) এবং আরো দু’জন ব্যক্তি বর্তমানে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং সাগরদিঘি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি থাকা তিনজন আহতের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।